গ্রামের বিষফোঁড়া বিএনপি নেতার ইটভাটা,ধ্বংস হচ্ছে আবাদি জমি, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত গ্রামবাসী

গ্রামের বিষফোঁড়া বিএনপি নেতার ইটভাটা,ধ্বংস হচ্ছে আবাদি জমি, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত গ্রামবাসী

 

সিটিজি ট্রিবিউন চট্টগ্রাম:

 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার ইছানগরে ফসলি জমি ও আবাসিক এলাকার মধ্যে গড়ে উঠেছে মেসার্স প্যারাগন ব্রিকফিল্ড নামের ইটভাটা। ইটভাটার সন্নিকটে রয়েছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্টান,মসজিদ,মাদ্রাসা এবং চতুর্পাশে রয়েছে বসতি ও আবাদি জমি, জানা যায়

ভাটাগুলোর নেই কোন পরিবেশগত ছাড় পত্র,আর বৈধ লাইসেন্স।

তারপরও কোন এক অদৃশ্য কারণে কোন রকমের আইনের তোয়াক্কা না করেই বছরের পর বছর চলছে ইট প্রস্তুত। ইট ভাটার বিষাক্ত ধোয়া ধুলোবালি এবং অস্বস্তিকর পরিবেশ দুর্বিষহ করে তুলেছে সাধারণ গ্রামবাসী এবং ছোট ছোট ছেলে মেয়ে ও স্কুলে পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের স্বাভাবিক জীবন।

স্হানীয়দের গ্রামবাসী এবং কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায় শ্বাসকষ্ট হাঁপানি সহ নানানরোগে আক্রান্ত তারা। একদিকে ইটভাটার কারণে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে পড়ালেখা থেকে শুরু করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে, পাশাপাশি উজাড় হচ্ছে গাছপালা,বিষাক্ত হচ্ছে পরিবেশ।

শুধু তাই নয়, স্কুলে যাওয়ার সময় প্রায় সময় শুনতে হয় ইটভাটায় কর্মরত শ্রমিকদের অশালীন আচরণ এবং বিকৃত অঙ্গভঙ্গি।প্রতিনিয়ত নির্গমন হচ্ছে ইটভাটার কার্বন-ডাই-অক্সাইড।

ফলে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি স্বাস্হ্য ঝুকিতে রয়েছে গ্রামবাসী এবং শিশু বৃদ্ধ থেকে শুরু করে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরাও। ইটভাটা তুলে দেয়ার জন্য গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে স্বাক্ষর করে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগও করেছেন কিন্তু কোনো রকম সুফল পাচ্ছেনা গ্রামবাসী। তাই গ্রামবাসী এবং ছাত্র-ছাত্রীদের সরকারের কাছে আবেদন ইটভাটা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।

এদিকে ইটভাটা পরিচালনা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন রয়েছে কিনা এবং বসতি ও আবাদি জমি এবং স্কুল, মসজিদ,মাদ্রাসার পাশে কিভাবে ইটভাটা পরিচালিত হচ্ছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্যারাগন ব্রিক ফিল্ডের মালিক মোহাম্মদ ফারুক মুঠোফোনে বলেন ইটভাটাটি ১৯৯৫ সাল থেকে পরিচালিত হয়ে আসছে, শুরুতে এটি তার বাবা করতেন এখন পর্যায়ক্রমে তারা করছেন।

ইটভাটার শ্রমিক দ্বারা রাস্তায় চলাচলরত স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের ইভটিজিং এর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন এ ব্যাপারে তিনি জানেন না তবে তার কাছে কোন অভিযোগ এলে তিনি দ্রুত সেটার সমাধান করেন। যদিও তিনি ভাটা পরিচালনার সব রকম কাগজপত্র আছে বলছেন কিন্তু কোন রকম কাগজপত্র কিংবা অনুমোদনপত্র তিনি উপস্থাপন করতে পারেনি।

তবে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের লিখিত অভিযোগ করার পরও ইটভাটা বন্ধে জোরালো কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছেনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে চর পাথরঘাটা ইউনিয়নের ইউএনও মোঃ মামুনুর রশিদ বলেন তার কাছে লিখিত অভিযোগ আসেনি যদি আসে তিনি দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।

অপরদিকে,পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মফিদুল আলম বলছেন আবাসিক এলাকার ১ কিলোমিটার মধ্যে কোন ইট ভাটার অনুমোদন যদি থেকে সেটা অবৈধ,এধরনের অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থার কথা জানালেন তিনি।

এদিকে পরিবেশবিদ প্রফেসর ডক্টর ইদ্রিস আলী বলছেন অবৈধ ইট ভাটা বন্দে আইনি কোনো জোরালো পদক্ষেপ নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।এখানে তিনি প্রশাসনের নির্লিপ্তাতাকে দায়ী করছেন। এই ধরনের ব্রিকফিল্ডের কারণে দেশের আবাদী জমির সংকট সৃষ্টি হচ্ছে,ফসল কমে যাচ্ছে,

বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হচ্ছে সর্বোপরি পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তাই স্থানীয় প্রশাসনকে জোরালো ভূমিকা বারণ করার আহ্বান জানান তিনি।

 

Leave a Reply