কক্সবাজার প্রতিনিধি,২১ সেপ্টেম্বর।কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, তাঁর বড় ছেলে হাসান মেহেদী রহমান ও পৌরসভার কাউন্সিলর ওমর সিদ্দিক লালুর ২০ লাখ ৩০ হাজার ৫০৫ টাকা জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। স্যোশাল ইসলামী ব্যাংকের কক্সবাজার শাখায় অভিযান চালিয়ে সংশ্লিষ্ট তিনজনের ব্যাংক হিসাবের ওই টাকা জব্দ করা হয়েছে।
জব্দ হওয়া টাকার মধ্যে পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের ১৮ লাখ ৭৮ হাজার ৬০১ টাকা, তাঁর বড় ছেলে হাসান মেহেদী রহমানের এক লাখ ৩৪ হাজার ৭৪ টাকা ও পৌর কাউন্সিলর ওমর সিদ্দিক লালুর ১৭ হাজার ৮৩০ টাকা রয়েছে।দুর্নীতি দমন কমিশন চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশ্বস্থ একটি সুত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দূর্নীতি দমন কমিশন চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক শরীফ উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি দল সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে স্যোশাল ইসলামী ব্যাংকের কক্সবাজার শাখায় অভিযান চালিয়ে এই টাকা জব্দ করা হয়েছে।
ইতোপূর্বে কক্সবাজার পৌরসভার ১০ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জাবেদ মো. কায়সার নোবেলের একদফায় ১ কোটি ৬৭ লাখ ১১ হাজার টাকা মূল্যের ১.০১১১ একর জমি, আরেকদফায় ২০ কোটি ৮০ লাখ টাকা ও কক্সবাজার শহরে ৪টি ফ্ল্যাটও জব্দ করা হয়েছে।
দুদকের ওই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, কক্সবাজারে ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত একটি মামলার তদন্ত চলাকালে সাবেক পৌর কাউন্সিলর জাবেদ মো. কায়সার নোবেলসহ কক্সবাজার জেলার ১০ জন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব অনুসন্ধান করছে দূদক।
এই ১০ জনের মধ্যে কক্সবাজারে কর্মরত দুইজন সাংবাদিকও রয়েছেন। এই অনুসন্ধানকালে ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত ঘটনায় পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, তাঁর বড় ছেলে হাসান মেহেদী রহমান ও পৌর কাউন্সিলর ওমর সিদ্দিক লালুর নামও উঠে আসে।
সুত্র মতে, দূদকের অনুসন্ধানে কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর জাবেদ মো. কায়সার নোবেলের নামে চলমান বেসিক ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, মিচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক এবং ট্রাস্ট ব্যাংক কক্সবাজার শাখায় ইতোপূর্বে ২০ কোটির বেশি টাকার সন্ধান পায় দূদক। ওই টাকা জব্দের পর কক্সবাজার জেলা ডাকঘরে আরও ৮০ লাখ টাকার সন্ধান পেয়েছে সংস্থাটি। সর্বশেষ ইউনিয়ন ব্যাংকের কক্সবাজার শাখায় আরও ৪২ লাখ টাকা পাওয়া যায়।
সুত্র জানিয়েছেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর ইউনিয়ন ব্যাংকে সঞ্চিত ওই ৪২ লাখ টাকা জব্দ করতে অভিযান চালায় দূদক।ওই সুত্র জানায়, মেয়র মুজিবুর রহমান, তাঁর ছেলে হাসান মেহেদী রহমান ও কাউন্সিলর ওমর সিদ্দিক লালুর ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে কক্সবাজার শহরের থানা রাস্তার মাথায় স্যোশাল ইসলামী ব্যাংকের কক্সবাজার শাখায় অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশন। ওই ব্যাংকে তিনজনের হিসাবে ২০ লাখ ৩০ হাজার ৫০৫ টাকা পাওয়া যায়।
অভিযোগ মতে, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় কথিত মধ্যস্থতার (দালালি) নামে অবৈধ উপায়ে এসব টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে নিশ্চিত হয়েছে দূদক। তাই পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, ছেলে হাসান মেহেদী রহমান, কাউন্সিলর ওমর সিদ্দিক লালুর ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়।
এছাড়াও একই অভিযোগে সাবেক কাউন্সিলর নোবেলের নামে চলমান ব্যাংক হিসাবে পাওয়া ২০ কোটি, ডাকঘরে পাওয়া ৮০ লাখ টাকা, ইউনিয়ন ব্যাংকের ৪২ লাখ টাকা এবং কক্সবাজার শহরের অভিজাত বেষ্ট ওয়েস্টিন হোটেলে দুইটি ফ্ল্যাট, ওয়ার্ল্ড বীচ হোটেলে একটি ও আরেকটি আবাসিক বিল্ডিংয়ে একটি ফ্ল্যাট জব্দ দেখানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সাবেক কাউন্সিলর জাবেদ মো. কায়সার নোবেল ও দুই সাংবাদিকসহ জেলার ১০ জনের হিসাব অনুসন্ধান করছে। এছাড়াও রামু চাকমারকুল এলাকার এন আলমকে দুদকে তলব করা হয়েছে|