ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে জমি সহ ঘর দেয়ার নজির পৃথিবীর আর কোথাও নেই,হস্তান্তর হবে আরো ১০৯টি ঘর
আয়াজ সানি সিটিজি ট্রিবিউন;
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠা করলেন স্বাধীন বাংলাদেশ। যুদ্ধ বিধ্বস্ত নবীন দেশে ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে নোয়াখালী সফরে গিয়ে আশ্রয়হীনদের প্রথম পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেন বঙ্গবন্ধু।
জাতির পিতার কন্যা হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ১ম সরকার গঠনের পর ১৯৯৭ সালে আশ্রয়হীনদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারি অর্থায়নে প্রথম উদ্যোগ হিসেবে গ্রহণ করেন “আশ্রয়ণ প্রকল্প”।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে তাঁর কন্যা দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বাসস্থান নিশ্চিতের ঘোষনা দেন। সরকারি উদ্যোগে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ভূমি ও গৃহ প্রদানের এ নজির পৃথিবীর বুকে অনন্য। একসাথে একই দিনে এতসংখ্যক ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে জমি সহ ঘর দেয়ার নজির পৃথিবীর আর কোথাও নেই।
“মুজিবশতবর্ষে একজন লোকও গৃহহীন থাকবে না” মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সারাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ০২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদানের কার্যক্রম গ্রহণ করেন।
১ম পর্যায়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২৩ জানুয়ারি ২০২১. তারিখে সারাদেশে ৬৯,৯০৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ০২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রাম জেলায় ১ম পর্যায়ে ১৪৪৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ০২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তীতে ২য় পর্যায়ে ২০ জুন ২০২১. সারাদেশে ৫৩,৩৪০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ০২ শতাংশ জমিসহ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে।
২য় পর্যায়ে চট্টগ্রাম জেলায় ৬৪৯টি পরিবারকে ০২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ অনন্য উদ্যোগে এখন শামিল হবার জন্য বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবর্গ এগিয়ে এসেছেন। ইতোমধ্যে বেসরকারি উদ্যোগে চট্টগ্রাম জেলায় ১২০ টি ঘর নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প খাতে অর্থ অনুদান দিচ্ছেন।
১ম ও ২য় পর্যায়ের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ৩য় পর্যায়ে গত ২৬ এপ্রিল সারাদেশে ৩২,৯০৪ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ০২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। চট্টগ্রাম জেলায় ৩য় পর্যায়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে ১২১৬ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ০২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্ধারিত নমুনা ও ডিজাইন অনুসরণ করে উন্নতমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে এসকল টেকসই এবং মানসম্মত ঘর ভূমিহীন এবং গৃহহীনদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে।
আগামী ২১ জুলাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে ৩য় পর্যায়ের (২য় ধাপ) ২৬,২২৯ টি পরিবারকে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ০২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রাম জেলায় ৩য় পর্যায়ে (২য় ধাপ) ৫৮৭ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ০২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হবে।
মীরসরাই উপজেলায় মোট ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের সংখ্যা ৩৫৬ টি। তন্মধ্যে ১ম পর্যায়ে ৫০টি, ২য় পর্যায়ে ২৫ টি এবং ৩য় পর্যায়ের (১ম ধাপে) ২০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ০২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে। আগামী ২১ জুলাই ২০২২ খ্রি. আরো ১০৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ০২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হবে। ঘরগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে।
মীরসরাই উপজেলায় সরকারি খাসজমির স্বল্পতা থাকায় ব্যক্তিগত জমি ক্রয়পূর্বক ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য এ কার্যালয় হতে প্রস্তাব প্রেরণ করা হলে ১১০টি পরিবারের জন্য ২.৬০ একর জমি ক্রয় বাবদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের House Construction Fund By Private Finance নামীয় একাউন্ট হতে ৩,৬৪,০০,০০০/- (তিন কোটি চৌষট্টি লক্ষ) টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়।
“ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য জমি সংস্থান সংক্রান্ত নীতিমালা-২০২১” এর নির্দেশনা মোতাবেক ২.৬০ একর জমি ক্রয় বাবদ ৩,৪৯,০০,৮১৯/- (তিন কোটি ঊনপঞ্চাশ লক্ষ আটশত ঊনিশ) টাকা ব্যয় হয়েছে এবং অবশিষ্ট ১৪,৯৯,১৮১/- (চৌদ্দ লক্ষ নিরানব্বই হাজার একশত একাশি) টাকা প্রকল্প কার্যালয়ে ফেরত প্রদান করা হয়েছে।