বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে তরুণ সমাজ বাংলাদেশকে এগিয়ে নিবে,আজকের দিনের এই প্রত্যয়– স্পীকার
আয়াজ সানি সিটিজি ট্রিবিউন ঢাকা, ১৬ আগস্ট, ২০২২
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন অকুতোভয়, আপোষহীন।অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল তাঁর রাজনৈতিক মূল দর্শন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে তরুণ সমাজ বাংলাদেশকে এগিয়ে নিবে, আজকের দিনের এই প্রত্যয়।
জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী পালন উপলক্ষে নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পীকার আজ এসব কথা বলেন।
এসময় জাতির পিতা, বঙ্গমাতা এবং তাঁদের শহীদ পরিবারবর্গসহ ১৫ আগস্টের সকল শহীদদের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে রক্ষিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় দিবসটির কর্মসূচি। দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। জাতির পিতার জীবন ও কর্মের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। সবশেষে ১৫ আগস্টের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জাতির পিতার শৈশব ও কৈশোরসহ তাঁর পরিবারের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের নানাদিক তুলে ধরে বলেন, বাঙালি জাতির দারিদ্রতা ও বৈষম্য দূর করে সমতা প্রতিষ্ঠাই ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের মূল লক্ষ্য।
অন্যায়ের কাছে তিনি কখনোই মাথা নত করেন নি। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা ছিলেন বিশ্বের শোষিত-নিপীড়িত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির অগ্রনায়ক। দুঃখ-দুর্দশাগ্রস্ত ও অসহায় মানুষের প্রতি ছিল তাঁর গভীর মমত্ববোধ। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে ভগ্নস্তুপ থেকে সোনার বাংলায় রুপান্তরের পেছনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকার কথা তুলে ধরেন স্পীকার।
তিনি বলেন, জাতির পিতার আদর্শ ধারণ করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন।
স্বল্পোন্নত দেশের ক্যাটাগরি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, দারিদ্র্য বিমোচন, বিদ্যুৎ, বৈদেশিক সম্পর্কসহ প্রতিটি সেক্টরে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়।
পদ্মাসেতুসহ বিভিন্ন মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের উদাহরণ তুলে ধরে স্পীকার বলেন, জাতির সকল উন্নয়নে জাতির পিতা আছেন এবং চিরদিন থাকবেন। এসডিজি’র উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এর অনেকগুলো লক্ষ্য ও অভীষ্ট কথা জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে উল্লেখ করে গেছেন।
স্পীকার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিব বর্ষ’ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালিত হয়েছে। সুতরাং স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির মধ্য দিয়ে এদেশের তরুণ প্রজন্ম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির পিতার আদর্শ ও দর্শনকে ধারণ করে বাংলাদেশকে সম্মৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে, বঙ্গবন্ধুর ৪৭তম শাহদাত বার্ষিকীতে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্পীকার।
অনুষ্ঠানে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। নিউইয়র্ক সফররত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল খুরশিদ আলমসহ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দও অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে মিশনের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারিগণ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধাগণ,
এবং যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি অংশগ্রহণ করেন।