উন্নয়ন প্রশাসনে “বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক-২০২২” পেলো পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়
আয়াজ সানি সিটিজি ট্রিবিউন ঢাকা,২৩জুলাই:
প্রথমবারের মতো ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ পেলেন প্রশাসনের ২৭ জন কর্মকর্তা ও ৪টি সরকারি প্রতিষ্ঠান। আগে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতা, মননশীলতা ও উদ্ভাবনী প্রয়াসকে উৎসাহিত করতে ‘জনপ্রশাসন পদক’ দেওয়া হতো। এবার নাম বদলে নতুন আঙ্গিকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানে কর্মকর্তাদের এ পদক দেওয়া হলো।
আজ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২৭ জন কর্মকর্তা, তিনটি মন্ত্রণালয় ও একটি ইউনিটের কাছে পদক তুলে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পদক তুলে দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক নীতিমালা, ২০২২’ অনুযায়ী সাধারণ প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন প্রশাসন, মানব উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, দুর্যোগ ও সংকট মোকাবিলা, অপরাধ প্রতিরোধ, জনসেবায় উদ্ভাবন, সংস্কার, গবেষণা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক দেওয়া হয়েছে।
এবার ‘সাধারণ প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা’য় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শান্তি দর্শন বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমি পুনরুদ্ধার ও উন্নয়নের ধারণা বাস্তবে রূপায়ণ করে ‘উন্নয়ন প্রশাসনে’ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক পেয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় উন্নয়ন প্রশাসনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দারিদ্র বিমোচন, ড্রেজিং কার্যক্রমের মাধ্যমে ভূমি পুনরুদ্ধার, উদ্ধারকৃত জমিতে বনায়ন, আশ্রয়ন, শিল্প পার্ক স্থাপন, নিচু জমি উচু করে ভিলেজ প্ল্যাটফর্ম তৈরী করাসহ দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে যার স্বীকৃতি স্বরুপ এই সম্মাননা অর্জন।
এছাড়াও নদী ড্রেজিং এর মাধ্যমে ১৭টি জেলায় ৩৪১৭.২৫ হেক্টর ভূমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে, যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৪৭৬৩৮২.৬২ লক্ষ টাকা এবং ক্রসড্যাম/ক্লোজার নির্মাণের মাধ্যমে ভূমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে ১০২৮২১.৫০ হেক্টর।
উল্লেখ্য, সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার এপর্যন্ত ৩ বার জনপ্রশাসন পদক গ্রহণ করেছেন। তিনি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে পদায়ন হওয়ার পূর্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) এবং এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালনকালীন তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশ্বের অন্যতম সম্মানজনক পুরস্কার ‘ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি’ (ডব্লিউএসআইএস) পুরস্কার টানা ৫বার গ্রহণ করেন।
এছাড়া তিনি বাংলাদেশ স্কাউটস এর সর্বোচ্চ অ্যাওয়ার্ড ‘রৌপ্য ব্যাঘ্র’ এবং বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশন কর্তৃক অতীশ দীপংকর শান্তি পুরস্কার অর্জন করেছেন। কবির বিন আনোয়ার ১৯৬৪ সালের ২২ মে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
মানব উন্নয়ন’ ; ‘দুর্যোগ ও সংকট মোকাবিলা
;জনসেবায় উদ্ভাবন’ ক্ষেত্রে অনবধ্য অবদানের জন্যও সম্মননা পুরস্কার দেয়া হয়।
পুরস্কার হিসেবে একটি স্বর্ণপদক (২১ ক্যারেট মানের ১৫ গ্রাম ওজনের) এবং রাষ্ট্রীয় মনোগ্রাম সংবলিত সম্মাননাপত্র দেওয়া হবে।
ব্যক্তিগত অবদানের জন্য ২ লাখ টাকা, দলগত অবদানের জন্য ৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। দলগত অবদানের ক্ষেত্রে দলের সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা ৫ জন। দলের প্রত্যেক সদস্যকে স্বর্ণপদক, সম্মাননাপত্র ও ক্রেস্ট দেওয়া হয় এবং নগদ পুরস্কারের ৫ লাখ টাকা সদস্যদের মধ্যে সমভাবে বণ্টন করা হবে। প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে স্বর্ণপদক, ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।
পুরস্কার প্রদান পর্বটি পরিচালনা করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম। তিনি জানান, ‘পরিবেশন উন্নয়ন’ এবং ‘সামাজিক উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা’ ক্ষেত্রে মানসম্মত আবেদন না পাওয়ায় এ দুটি ক্ষেত্রে এবার পদক দেওয়া হচ্ছে না।
অনুষ্ঠানে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এমপি ও উপ-মন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এমপি উপস্থিত ছিলেন।